Header Ads



মোনাজাতের ফজিলত-মোনাজাতের সময় দুই হাতের তালু আকাশের দিকে মেলে ধরা।

 

মোনাজাতের ফজিলত

আল্লাহ তাঁর বান্দাদের দিতে ভালোবাসেন। আরও ভালোবাসেন বান্দা যেন তার দরবারে দুই হাত তুলে চায়।

মোনাজাত করা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় আমল। আল্লাহ চান বান্দা যেন দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে বেশি বেশি তার কাছে প্রার্থনা করে। হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা কর। কেননা আল্লাহ তায়ালা এটা পছন্দ করেন যে, তার কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করা হোক। (তিরমিজি : ৩৫৭১)। আল্লাহ তায়ালা নবীজিকে বলেছেন, যখন আমার বান্দারা আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন আপনি বলে দিন, আমি নিকটেই আছি; আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে। (সুরা বাকারা : ১৮৬)


বান্দা আল্লাহর কাছে যত বেশি দোয়া করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে তত বেশি ভালোবাসবেন এবং প্রার্থিত জিনিস দান করবেন। হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালার সত্ত্বার ভেতর অনেক বেশি লজ্জাশীলতার গুণ রয়েছে। তিনি না চাইতে অনেক বেশি দানকারী। যখন মানুষ চাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার সামনে হাত ওঠায়, তখন সেই হাতগুলো খালি ও ব্যর্থ হিসেবে ফিরিয়ে দিতে তার লজ্জা হয়। (তিরমিজি : ৩৫৫৬)


মোনাজাত একা একা করা যায়, আবার কয়েকজন একত্রে সমবেত হয়ে কোনো একজনের নেতৃত্বে সম্মিলিত মোনাজাতও করা যায়। হজরত হাবিব ইবনে মাসলামা ফিহরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমি নবীজিকে (সা.) বলতে শুনেছি, নবীজি (সা.) বলেন, যেকোনো জামাত এক জায়গায় সমবেত হয়ে তাদের মধ্যে একজন দোয়া করে আর অন্যরা আমিন আমিন বলতে থাকে, তবে আল্লাহ তায়ালা তাদের দোয়া অবশ্যই কবুল করেন।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ৩/৩৪৭)


মোনাজাত আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা ও নবীজির ওপর দরুদ পাঠের মাধ্যমে শুরু করা উত্তম। স্বয়ং নবীজি (সা.) এই নিয়ম শিক্ষা দিয়েছেন। হজরত ফাজালা বিন উবায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে নামাজ আদায় করল, এরপর সে এভাবে দোয়া করতে শুরু করল হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মাফ করে দাও, তুমি আমার ওপর রহম কর।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে নামাজি! তুমি বেশ তাড়াহুড়া করে ফেললে! তুমি নামাজ আদায় করে যখন বসবে তখন আগে আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করবে, তারপর আমার ওপর দরুদ পড়বে। তারপর আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।’ (তিরমিজি : ৩৪৭৬)

 

হজরত ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) মুশরিকদের বাহিনীর দিকে তাকালেন; তাদের সংখ্যা ছিল এক হাজার। আর নবীজির সাথীবর্গের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৯ জন। তখন নবীজি কেবলামুখী হয়ে হাত প্রসারিত করলেন, তারপর তার রবের দরবারে দোয়া শুরু করলেন হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেটা দান করুন। হে আল্লাহ! আপনি যদি মুসলমানদের এ দলটিকে ধ্বংস করে দেন তাহলে পৃথিবীতে আপনার ইবাদত হবে না।’ এভাবে দুই হাত প্রসারিত করে কেবলামুখী হয়ে বসে তার রবের কাছে দোয়া করতে থাকলেন; এমনকি এক পর্যায়ে তার কাঁধ থেকে চাদরটি পড়ে গেল।’ (মুসলিম : ১৭৬৩)

 

মোনাজাতের সময় দুই হাতের তালু আকাশের দিকে মেলে ধরা। যেভাবে একজন হতদরিদ্র কাঙাল সাহায্যপ্রার্থী কোনো কিছু পাওয়ার আশায় হাত পাতে। বান্দা আল্লাহর কাছে ভিখারি হয়ে দোয়া করছে এমন একটা ভাব যেন সত্যিই থাকে। হজরত মালেক ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইবে, তখন হাতের তালু দিয়ে চাইবে; হাতের পিঠ দিয়ে নয়।(আবু দাউদ : ১৪৮৬)

 

আল্লাহ তাঁর বান্দাদের দিতে ভালোবাসেন। আরও ভালোবাসেন বান্দা যেন তার দরবারে দুই হাত তুলে চায়। বান্দার চাওয়া দেখে আল্লাহ খুশি হন। আল্লাহর দরবারে বারবার চাওয়া। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণকর যা ইচ্ছা খুব বেশি বেশি চাওয়া, কাকুতি-মিনতি করা। তবে দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া করা যাবে না। কেননা নবী (সা.) বলেছেন, বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোনো পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে। বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন, সে বলে যে, আমি দোয়া করেছি, কিন্তু আমার দোয়া কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোয়া ছেড়ে দেয়।’ (বুখারি : ৬৩৪০; মুসলিম : ২৭৩৫)

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.