Header Ads



প্রবীণ রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব এ কে এম বেলায়েত হোসেনর সংক্ষিপ্ত জীবন কথা -পর্ব ০২

প্রবীণ রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব এ কে এম বেলায়েত হোসেন

আলহাজ্ব এ কে এম বেলায়েত হোসেন’র রাজনীতির টুকরো স্মৃতি

চলে গেল আরো একটি বছর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা(সহ সভাপতি সাবেক) আলহাজ্ব একেএম বেলায়েত হোসেন এর জীবন থেকে।
পা রাখলেন ৭৯ এ। শ্রদ্ধেয় একেএম বেলায়েত হোসেন জীবনের অধ্যায় শুরু করেছিলেন মানুষ গড়ার কারিগরের মহান পেশা শিক্ষকতা দিয়ে, পরর্বতীতে তিনি জাতির জনকের আদর্শিক সন্তান হিসাবে দেশ সেবার মহানব্রত নিয়ে শুরু করেন রাজনীতি, রাজনীতিতে এসে তিনি তাঁর যৌবনের সোনালী সময় গুলি কাটিয়ে দেন রাজপথে।
তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সান্নিধ্য পায় জাতির জনকের সহকর্মী চট্টলশার্দুল জননেতা এম এ আজিজের,সান্নিধ্য পায় জননেতা জহুর আহম্মদ চৌধুরী,জানে আলম দোভাষ,এম,এ হান্নান, সহ অনেক রাজনৈতিক মহীরুহের।
জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পরবর্তী সময় স্বৈরাচার জিয়া,এরশাদকে উৎখাত করে গনতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে দীর্ঘ সময় রাজপথে ছিলেন চট্টলার সূর্যসন্তান,চট্টলবাসীর আত্মার আত্মীয় নির্যাতিত মানুষর আশার প্রতিক চট্টলবীর আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে এক সাহসী সহযোদ্ধা হিসাবে। চট্টলবীরের সাথে একনাগারে কাটিয়ে দেন দীর্ঘ ৪২ বছর,চট্টলবীরের প্রয়াণের পর আজো তিনি তাঁর অনুসৃত নীতি অবলম্বন করে রাজনীতির মাঠে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং হাতা বিহীন কোটের আত্মকথন
উপমহাদেশের প্রত্যেক জাতীয় নেতার পোশাক আমি হাতাবিহীন কোট। আমি গর্বিত, আমাকে মানব জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা অতি আদরে নিজেদের স্মারক পোষাক হিসেবে পরিধান করে বিশ্ব মানব সমাজের কাছে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। উপমহা- দেশের শ্রেষ্ঠ নেতা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু তাঁর পছন্দের ধুসর রঙ্গে আমাকে তার গায়ে জরিয়েছিলেন।আমার পরিচয় হল জহর - কোট। নেতাজী সুভাসবোস সাদারঙ পছন্দ করতেন। তিনি আমাকে সাদা রঙে পরিধান করলেন।
আমি হাতা বিহীন কোট। আমি আমার জরজী-জীবনের পূর্ণতা পেলাম,আমি অমরত্ব লাভ করলাম
যেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাকে কালো রঙে তাঁর মুখ্য পোশাক রুপে পরিধান করলেন। প্রিয় পাঠক, কালো রং মুলত অন্ধকারের নির্দেশক চিহ্ন। অন্ধকার সবসময় আলোর জন্য উম্ মুখ হয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধু বলেছেন বিশ্ব দু'ভাগে বিভক্ত "শোষক আর শোষিত আমি শোষিতের পক্ষে।"বিশ্বের শোষিত সমাজ,
অন্ধকার সমাজ। সে শোষিত সমাজের একটি অংশ বাংলাদেশ। অন্ধকার সমাজ সবসময় আলোর প্রত্যাশা করে।বঙ্গবন্ধু তাঁর সারাজীবন শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত,নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্টার সংগ্রাম করেছেন। তাদের অন্ধকার জীবনে আলোর সন্ধান দিতে চেষ্টা করেছেন। আমাকে তিনি সেঅন্ধকার সমাজের প্রতিক রুপে চিহ্নিত করেছেন।এখানেই শেষ নয়। বঙ্গবন্ধু আমার বুকে স্থাপন করলেন ছয়টা
বোতাম। ছয়টা বোতাম শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্টার মেঘনাকাটা ঐতিহাসিক ছয় দফারই প্রতিক।
এখন আমি মুজিব কোট। আমার ঠিকানা স্বর্গের কাছাকাছি। এখন আমি বিশ্ববরেণ্য নেতা বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর গায়ের কোট, নাম আমার মুজিব কোট। শত সহস্র মুজিব প্রেমি আমাকে ভালবাসে- আদর করে। মুজিব প্রেমিক পরিচয় দিতে সভা সমাবেশ, মিটিং মিছিলে আমাকে ব্যাবহার করে থাকে।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমার ব্যবহার শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল।কারোর কাছে আমি স্থান পাইনি। অযত্নে অবহলায় আমাকে রাখা হল খাটের নীচে।আমার বুকে বঙ্গবন্ধুতো নেই,তার সেই শত সহস্র ভক্ত প্রেমিরাও নেই।যে বুকে একদিন বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করেছি বঙ্গবন্ধুর অন্তর্ধানের পর আজ সে পরিত্যাক্ত বুকে উই পোকার বাসা।
আমি মুজিব কোট - আমি পরিত্যাক্ত হয়ে যখন অন্তর্জালায় জলছিলাম,দেখলাম চট্টগ্রামে এক ব্যাক্তি আমাকে স্বযতনে স্বমহিমায় যথারীতি তার সুঠাম দেহে স্থান দিয়ে রেখেছে।আমি সারা দেশ ঘুরে চট্টগ্রামে এসে একজন খাটি বঙ্গবন্ধু প্রেমির দেখা পেলাম। তিনি হলেন চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের নেতা, চট্টল বীর আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সুসময়- দুসময় এমনকি জেলখানায় বন্দী অবস্থায়ত্ত তিনি তার আদর্শের প্রতিক মুজিব কোট পরিধান করতেন। কঠিনতম প্রতিকুল অবস্থায়ও তিনি পাহাড়ের মত অটল অনর থেকে মুজিব আদর্শ বাস্তবায়ন করার সংগ্রাম করেছেন।১/১১ এর সময় সামরিক বাহিনী সমর্থিত অবৈধ তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আলি আহমেদ চট্টলবীরকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ডে্কে পাঠান। তিনি মুজিব কোট পরা অবস্থায় বীরের মতই সার্কিট হাউজে গেলেন।  ফখরুদ্দীন তাকে তত্বাবধায়ক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিতে চাইলেন।মহিউদ্দিন সে'প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চলে গেলেন। দুদিন পর আন্দোলনে সক্রিয় নেতাদের সে'রাতে বাসায় না-থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি তার চশমা হিলের বাসায় চলে যান। বাসায় গিয়ে রাতের খাবার শেষ করে তিনি যথারীতি মুজিব কোট পরে বসে থাকলেন।রাত বারোটার কিছুপর মেট্রপলিটন পুলিশের ডিসি হেডকোয়ার্টারের নেতৃত্বে পুলিশ কর্মকর্তারা এসে তাকে নিয়ে যায় জেলখানায়।
প্রিয় পাঠক, আমি মুজিব কোট বলছি।
আমার আরও কিছু দুঃখ বেদনার কথা শুনুন। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখহাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দল ক্ষমতায় আসল। আমাকে নিয়ে শুরু হল টানাটানি। বড় নেতা, মাঝারি নতা,ছোট্ট নেতা,পাতি নেতা, হবু নেতা,এমপি, চেয়ারম্যান-মেম্বর, তাদের চেলাচামুণ্ডা সকলের এখন মুজিব কোট দরকার। শুরু হল মুজিব কোটের বিকৃতি। নেতাদের পছন্দসই লাল,সাদানীল, বেগুনি, কমলা,সবুজ, ছোট চেক বড় চেক হরেকরকম রঙের কোট গায়ে আছে হাজারে হাজার
কিন্তু ভিতরে মুজিব নাই। কোটের বিকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে নেতাদের মন মানষিকতার বিকৃতি। যে কালো কোট গায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দুর্নীতি, সন্ত্রাস,মাদক ও জঙ্গি-বাদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন সেই রকমের কোট পরে এমপি ও নেতারা মহা আনন্দেে উন্নয়ন খাতের অর্থ লুটপাট করছেন। আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পরেছেন। টাকার জন্য এরা নীতিনৈতি -কতা বিসর্জ্জন দিয়েছেন। আত্ম স্বার্থে অন্ধ হয়ে গেছেন।
---------------------------চলবে--------------------------

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.