Header Ads



বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং আমি – একেএম বেলায়েত হোসেন।

 

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং আমি
একেএম বেলায়েত হোসেন

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং আমি

 ( তিন)

 এর পরে কোন অংকটি কষতে চেষ্টা করব তা নিয়ে চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ করে জনাব শামসুল আলম মাষ্টার এসে কোন কারণ ছাড়া  টান দিয়ে  আমার পরীক্ষার খাতাটা নিয়ে গেলেন। আমি ওনার কাছ থেকে খাতাটি ফেরত নিতে চাইলাম কিন্তু তিনি খাতা না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শ্রদ্ধেয়  জনাব ছাবের আহমেদের অফিস কক্ষে চলে গেলেন।আমি পরীক্ষার হলে আমার নির্দিষ্ট আসনে বসে রইলাম। হঠাৎ হল সুপারের কণ্ঠে শোনা গেল : "হিয়ার ইজ এ

নোটিশ ফর ইউ। পরীক্ষার হলে শিক্ষক পরিদর্শক'র

সাথে অসদাচরণ করবার কারনে নবম শ্রেণীর পরীক্ষার্থী একেএম বেলায়েত হোসেন কে এক্সপেল করা হল। সাথে সাথে  তাকে পরবর্তী বিষয়ের পরী- ক্ষার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হলো। তাকে আজ সন্ধার পুর্বে স্কুল কম্পাউন্ড ত্যাগ করবার জন্য নির্দেশ দেয়া গেল।" আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত হল থেকে বেরিয়ে গেলাম। ঘটনার আকষ্মিকতায় হলের সকল পরীক্ষার্থী ছিল নির্বাক স্তম্ভিত। আমি প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের বাসায় গেলাম। তাঁর স্ত্রীকে সব বললাম। সান্ধায় কয়েকজন সহপাঠী বন্ধু এক সাথে আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিল। ছাত্ররা পরীক্ষা বর্জন করবার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি তাদেরকে বুঝিয়ে বললাম পরীক্ষা বর্জন আত্মঘাতী কাজ হবে। প্রধান শিক্ষক মহোদয় ফিরে আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধারন কর। তিনি ফিরে আসলে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এখন

কোন অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে তার সব দায় ভার আমার উপর চাপানো হবে।

কয়দিন পর৷ শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক কালি বাবু কল  -

কাতা থেকে ফিরে আসলেন। একদিন পর স্কুলের দপ্তরি (পিয়ন) শংকর আমাদের বাড়িতে এসে বলে গেল, হেডমা স্টার বাবু আমাকে তাঁর বাসায় যেতে বলেছেন। আমি সন্ধার পর তাঁর বাসায় গেলাম। তিনি সস্ত্রীক ড্রইং রুমে বসে আমার কাছ থেকে সব কথা শুনলেন। তার আগে সহকারী শিক্ষক কাজী হেদায়েত হোসেন এবং সেরাজুল মাওলা স্যারের

কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জেনেছেন। আমার কাছ থেকে সব শোনার পার তি চরম ক্ষোভের সাথেvবলে উঠলেন : নিজ ছাত্রকে অপদস্ত করার জন্য কোন শিক্ষক অতটা নিম্নমানের কুটিলতা এবং শঠতার আশ্রয় নিতে পার এটা ভাবতেও ঘৃনা হয়।

আমাকে তিনি রাতেই আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন এবং তিন দিন পর স্কুল অফিসে এসে দেখা করতে বললেন. জানতে পারলাম এ তিন দিন ধরে প্রধান শিক্ষক'র সহিত সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাবের আহমেদ সাহেব (পরে তাবলীগি হুজুর এবং চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের এডভোকেট,আজীবন অবিবাহিত এবং টেরি বাজারে দুদু মিয়া বিল্ডিংয়ের একটি ভাড়া রুমে জীবন কাটিয়েছেন) এবং সহকারী শিক্ষক দের দফায় দফায় বৈঠক হয়। কিন্তু সম্প্রতি

অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন বোর্ডের নির্বাচনে পরাজিত মুসলিমলীগ সমর্থিত প্রার্থী স্কুলের স্পোর্টস টিচার কুটিল শিরোমণি  চানৈক্য শামসুল আলম ইতিমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষকদের তার দলে ভিড়াতে সক্ষম হয়েছিল। সহ প্রধান শিক্ষক'র এক কথা যদি বেলায়েতকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা না-হয় তবে সকল

শিক্ষক এক যোগে পদত্যাগ করবে।

বলতেই হবে -চানৈক্য শামসুল আলম জিন্দাবাদ। তার চানৈক্যসম বুদ্ধির কাছে সবাই বসিভুত।

তিন দিন পর আমি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধেয় কালি বাবুর সহিত সাক্ষাৎ করি। তিনি অফিস সহকারীকে ডেকে  আমার বহিষ্কার আদেশ প্রস্তুত করতে বলে বাসায় চলে গেলেন। অফিস সহকারী প্রধান শিক্ষকের বাসায় গিয়ে তাঁর স্বাক্ষর নিয়ে আসেন। আমাকে বহিষ্কার আদেশ হস্তান্তর করলে আমি ওটা ছিড়ে টুকরো টুকরো করে উত্তরা বাতাসে উড়িয়ে দিলাম। আমি সোজা বাড়িতে চলে গেলাম।

পরদিন স্কুলের সহকারী শিক্ষক  শ্রদ্ধেয় কাজী হেদায়েত হোসেন আমাকে  তাদের বাড়িতে ডেকে পাঠালেন। তিনি আমাকে বললেন হেডমাস্টার স্যার এর সাথে কথা হয়েছে। সন্দ্বীপের কোন স্কুলে দশম শ্রেণিতে  তোমার ভর্তি সম্ভব নয়। তুমি বরং হাতিয়া চলে যাও। হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল হাইস্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমার শ্বশুর মোতালেব  সাহেব হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেখানে তোমার কোন সমস্যাই হবেনা। বিজ্ঞান শিক্ষক মোসাহেব মিয়া তোমার সব ব্যবস্থ করে দিবেন। তোমার এখন দশম শ্রণিতে প্রোভিশনাল এডমিশন হবে। ইতিমধ্যেই তোমার ট্রান্সফার সার্টিফিকেট পেয়ে যাবে। তুমি যত শীঘ্র সম্ভব হাতিয়া চলে গেলে ভাল হবে।সেদিনই সন্ধা বেলা প্রধান শিক্ষক কালি বাবুর বাসায় গেলাম। আমি তাঁকে হাতিয়া যাওয়ার কথা বললাম। জবাবে তিনি বললেন হাতিয়া

যাওয়া তোমার জন্য ভালো হবে। সেখানে হেদায়েতের শ্বশুর

প্রধান শিক্ষক। তোমার কোন অসুবিধা হবেনা। বিদায় বেলা

কদমবুসি করতে করতে বললাম স্যার আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন। তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বললেন, আমি তোমার জন্য দোয়া করি।আমি আশা করি তুমি শ্রষ্টার কৃপায় একদিন মানুষের মত মানুষ হয়ে এ অন্যায় অবিচারের জবাব দিবে। এ-সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেডাম অজোরে কাঁদছিলেন এবং আমার বুকে পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন। বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে আসবার সময় শ্রদ্ধেয় কালি বাবু আমার হাতে কিছু টাকা দিয়েছিলেন।

------------------- চলবে ----------------------------

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.