Header Ads



রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী-একেএম বেলায়েত হোসেন।

রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী

রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ চট্টলবীর আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ চট্টল বীর আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী,যার হৃদয়ে স্থায়ীভাবে বাসা বেধে বাস

করছেন জাতিরপিতা বঙ্গবন্দ্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নব্বই'র সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়ের কথা। মহিউদ্দীন চৌধুরী সহ আমরা কয়েকজন নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে বসতাম। বিকাল থেকে গভীর রাত অবধি আমাদের বৈঠক চলত। তুমুল আন্দোলন সংগ্রাম চলাকালে সকাল বিকাল দু'বেলা আমরা নিয়মিত অফিস করতাম। অনেকটা সরকারী কর্মচারীদের ইমার্জেন্সি ডিউটির মত।


শীত গ্রীষ্ম বর্ষা কিংবা ঝর বাদল কোন কিছুই আমাদের পথের বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি কোনদিন। আমাদের নেতা ছিলেন বঙ্গবন্দ্ধুর সাক্ষাৎ প্রতিচ্ছবি এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী,যার মাঝে দেখেছি বঙ্গবন্দ্ধুর মত নেতৃত্বের ইষ্পাত কঠিন দৃঢ়তা। দেখিছি নিজের প্রণিত রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করনে তাঁর নিজস্ব বৈশিষ্ট মন্ডিত স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া। দেখেছি কেন্দ্র ঘোষিত যেকোন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষে স্থানীয় সমস্যা সমাধানের দাবী গুলোর সমন্বয় করে নেতা কর্মীদের সাথে আন্দোলনের প্রতি সাধারন জনগনের সমর্থন আদায়ের সফল প্রচেষ্টা। মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ ঘোষিত আটাশ দফা দাবী তারই প্রকৃষ্ট উদাহরন।


পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক সৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে কর্মসুচির ব্যাপারে মহিউদ্দিন চৌধুরী কখনও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের অপেক্ষায় বসে থাকেননি। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত কর্মসুচির সহিত মহানগর আওয়ামীলীগ গৃহীত কর্মসুচির সমন্বয় ঘটিয়ে আন্দোলনকে অধিক বেগবান করেছেন তিনি। যে কারনে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সামরিক সৈর শাষন এবং খালেদা জিয়ার বেসামরিক সৈরাচরের পতন-ঘন্টা মহিউদ্দিনের চট্টগ্রাম থেকেই বেজেছিল।

১৯৮৭সালের ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায়,দারুল ফজল মার্কেট ভবনে দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা চলছিল। এ সময় সাদা পোষাক পরিহিত একজন লোক (সম্ভবতঃ গোয়েন্দা সংস্থার লোক) মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অফিসের বারান্দায় ডেকে নিয়ে কানে কানে কি যেন বলল। ফিরে এসে জনাব চৌধুরী সভার কাজ দ্রুত শেষ করতে বললেন। 


প্রয়াত সহসভাপতি আবুল কালাম সওদাগর সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন। সভা শেষে সবাইকে তাড়া তাড়ি নিজ নিজ বাসায় ফিরে যেতে বললেন মহিউদ্দিন চৌধুধী এবং সে রাতে নিজ বাড়ীতে না থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিলেন সবাইকে।সভা শেষে প্রয়াত সেকান্দর হায়াত খান,লিয়াকত আলি খান, নুরউদ্দীন চৌধুরী,বদিউল আলম সহ আমরা কয়জন বসে মহিউদ্দীন চৌধুরীর সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলাপ করছিলাম।এসময় মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অত্যন্ত শান্ত এবং গম্ভীর মনে হচ্ছিল। 


তিনি আমাদেরকে পরবর্তী কর্মসূচীর বিষয়ে অনেক গুলো দিক নির্দেশনা দিলেন। একপর্যায়ে বললেন,এবার আপনারাও বাসায় চলে যান। আমাদের উদ্দেশ্যে আবারও জোড় দিয়ে বললেন, আপনারা কেউই আজ রাতে নিজের বাসায় থাকবেন না। আজ রাতে পুলিশ নেতা- কর্মিদেরকে গনহারে গ্রেপ্তার করতে পারে।সেকান্দর হায়াত খান বললেন, আপনাকে বেশী স-তর্ক থাকা দ-রকার। একথার কোন জবাব দিলেননা তিনি। এবার আমি জিজ্ঞেশ করলাম, মহিউদ্দিন ভাই,আপনি কোথায় থাকবেন ? জবাবে তিনি বললেন, আপনারা আমার জন্য চিন্তা করবেননা। নিজেরা নিরাপদ স্হানে থাকবেন। আমি বাসায় না এসে রিয়াজ উদ্দি বাজারের ভিতর এক হোটেলে রাত যাপন করি।


 পরদিন সকালে আশেক রসুল টিপু জানাল রাত বারটার পর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার গিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তাঁর চশমা হিলের নিজ বাসভবন থেকে কমিশনারের সাথে জরুরী আলোচনার কথা বলে নিয়ে গেছেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী আমাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি নিজে কিন্তু বাসায় অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তার এড়ানোর কোন চেষ্টা তিনি করেননি। কখনও গ্রেপ্তারের ভয়ে তিনি পালিয়ে বেড়াননি। বঙ্গবন্ধুর মত সৌর্য বীর্য সাহস, গনমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠর জন্য দৃঢ় সংকল্প আত্মপ্রত্যয়ি এক বিশাল মাপের নেতা আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী। মহিউদ্দিন চৌধুরীই সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত উত্তরসূরী। যারা দুর্দিনের নিঃস্বার্থ ত্যাগী কর্মী তারা সকলেই তার মাঝে খুজে পায় বঙ্গবন্ধুকে।


এবিএম মহিউদ্দি চৌধুরী বিভিন্ন পেশার কিছু লোককে দলের সদস্যভুক্ত করেছিলেন। এরা '৯০ এর পূর্বের সে উত্তাল দিনগুলোতে আওয়ামীলীগের সমর্থক ও ছিলেননা। রাজনীতিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রোডাক্ট/আবিষ্কৃত এসব নবাগত ভাগ্যবানরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাত ধরে অতি দ্রুত দলীয় হাই কমান্ডের কাছে পৌছার শিড়িতে উঠে যান।মহিউদ্দিন চৌধুরীর সরলতার সুযোগে এসব নবাগত ব্যবসায়ী ব্যক্তিগন তাদের আরাদ্ধ ব্যবসায়ে সর্বোচ্চ সফলতা লাভ করে। ২০০৮ সালের পর থেকে তারা পর্যায়ক্রমে এম,পি, মন্ত্রী এবং বিভিন্ন সরকারী অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে নিজেদের স্থান করে নেন।


তাদের কাছে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রয়োজন এখানেই শেষ হয়ে যায়। জনগনের এ মহান নেতাকে তারা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজে নেমে পরে। এলক্ষ্যে তারা এক অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠে। দল এখন নকলের দাপটে নাকাল। '৭৫ এর পর থেকে '৯০ পর্যন্ত দলের চরম সংকটের সময় যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংগঠনকে টিকিয়ে রেখেছিল, যাদের ত্যাগের ফসল আজকের সরকার, ঐসব নিঃস্বার্থ ত্যাগি কর্মীদের দেশ ও দলের স্বার্থে নকল প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে বিলম্বের আর সময় নেই।

আলহাজ্ব একেএম বেলায়েত হোসেন-উপদেষ্টা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.