Header Ads



বিস্ময়কর ফুটবল জাদুকর সৈয়দ আব্দুস সামাদ।

বিস্ময়কর ফুটবল জাদুকর সৈয়দ আব্দুস সামাদ।

ফুটবল জাদুকর সামাদ তার বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারে  অনেক বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। 

১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ভুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল অগাধ প্রেম।
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কলকাতা মহানগরে ফুটবল খেলতে আসেন।

সামাদ ১৯১২ সালে কলকাতা মেইন টাউন ক্লাবে যোগ দেন। ১৯১৬ সালে ইংলিশ ক্লাব সামারসেটের পক্ষ হয়ে খেলেন। ১৯১৫-৩৮ পর্যন্ত এই ২৩ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে ঘটেছে নানা বিস্ময়কর ঘটনা। এ কারণেই তার নামের সামনে ‘জাদুকর’ শব্দটি জুড়ে গেছে।

তখনো ফুটবল বিশ্বের কিংবদন্তী ব্রাজিলের পেলের জন্ম হয়নি। আরেক কিংবদন্তীর ম্যারাডোনার কথা তো বহু দূরে।

বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অপূর্ব ক্রীড়াশৈলির প্রকাশ ঘটিয়ে ফুটবল জগতে তুমুল আলোড়নের মাধ্যমে মানুষের মন কাড়েন বাঙালি ফুটবলারদের আইকন সামাদ। পুরো নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। তাকে ফুটবলের জাদুকর হিসেবে ডাকা হয়। ব্রিটিশ-ভারতের বাংলায় শুধু নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ফুটবলে নিজের অসাধারণ ক্রীড়াকৌশল দেখানো জাদুকর ১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ভুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। 

ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল অগাধ প্রেম। পড়াশোনায় তার খুব একটা মনোযোগ না থাকার কারণে অষ্টম শ্রেণীতেই এই অধ্যায়ের ইতি টানেন। পড়াশোনার পরিবর্তে তিনি খেলাধুলাতেই মনোযোগ দেন। অল্প বয়সেই কলকাতার বড় বড় ক্লাব থেকে ডাক আসে তার। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই কলকাতা মহানগরে ফুটবল খেলতে আসেন।

সামাদ ১৯১২ সালে কলকাতা মেইন টাউন ক্লাবে যোগ দেন। ১৯১৬ সালে ইংলিশ ক্লাব সামারসেটের পক্ষ হয়ে খেলেন। ১৯১৫-৩৮ পর্যন্ত এই ২৩ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে ঘটেছে নানা বিস্ময়কর ঘটনা। এ কারণেই তার নামের সামনে ‘জাদুকর’ শব্দটি জুড়ে গেছে। তার খেলার দক্ষতায় তৎকালীন সর্বভারতীয় ফুটবল দল গ্রেট ব্রিটেনের মতো বিশ্বসেরা ফুটবল দলের বিরুদ্ধে এক অবিস্মরণীয় জয় অর্জন করে।

সালটা সম্ভবত ১৯৩৩ কি ৩৪ হবে।
ফুটবল তখন হালের ক্রেজ। সর্বভারতীয় ফুটবল দল সফরে গেছেন ইন্দোনেশিয়ায়। খেলার মাঠে প্রজাপতির মত উড়ছেন ৬ ফিট উচ্চতার এক কৃষ্ণকায় যুবক।
ইন্দোনেশিয়ার ৪-৫ জন প্লেয়ারকে কাটিয়ে বল মারলেন গোলপোস্ট বরাবর। আফসোস,গোল হলোনা। বল লাগল গোলবারে। কি অদ্ভুত ব্যাপার স্যাপার। মিনিট ৫ এর ভেতর আবারো সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

এইবার গোধরে বসেছেন যুবকটি। তার শর্ট মেজারমেন্ট তো এমন হবার কথা না। তিনি সরাসরি ম্যাচ পরিচালনা কমিটির কাছে নালিশ করে বসলেন। গোলপোস্টের মাপ ছোট আছে। অবিশ্বাস্যের মাপা হল গোলপোস্ট। হ্যাঁ, আসলেই ইঞ্চি চারেক ছোট গোলপোস্ট। কি আর করা। শেষে বারে লাগা সবগুল শর্ট গোল হিসেবে ধরা হল।


তিনি ১৯২৪ সালে ভারতের জাতীয় ফুটবল দলে নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯২৬ সালে দলটির অধিনায়ক হন। এই সময়ে ভারতের হয়ে বার্মা (মায়ানমার), সিলোন (শ্রীলঙ্কা), সুমাত্রা-জাভা-বোর্নিও (ইন্দোনেশিয়া), মালয় (মালয়েশিয়া), সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন ও ইংল্যান্ড সফর করেন। চীনের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ভারত ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকলেও তাঁর দেওয়া চারটি গোলে ৪-৩ গোলে অবিস্মরণীয় এক জয়লাভ করে। এ খেলা দেখে স্কটিশ এক ফুটবলবোদ্ধা বলেন, “সামাদ ইউরোপে জন্মগ্রহণ করলে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে স্বীকৃতি পেত।

১৯২১-৩০ পর্যন্ত তিনি ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের হয়ে খেলেন। ১৯২৭ সালে নিজের দল ইস্ট বেঙ্গল তার এক গোলের ফলেই ইংল্যান্ডের ম্যাশউড ফরেস্টের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল। তাঁর খেলায় মুগ্ধ হয় ব্রিটিশরাও। ১৯৩৩ সালে সামাদ যোগ দেন কলকাতা মোহামেডানে। মোহামেডানকে প্রায় একক কৃতিত্বে টানা পাঁচবার কলকাতা সিনিয়র ডিভিশন লিগে চ্যাম্পিয়ন করেন তিনি। ১৯৩৬ সালে খেলাকালীন গুরুতর আহত হওয়ার কারণে তিনি আর খেলতে পারেননি।

যে মানুষটির কথা এতক্ষন বলা হল তিনি আর কেউ নন। সামাদ জাদুকর ফুটবল জাদুকর সৈয়দ আব্দুস
সামাদ। যিনি পেলে,ম্যারাডোনা,ষ্টেফানো,গারিঞ্জা, বেকেনবাওয়ার,পুস্কাসর পাওলো রচি, পেলাতিনি, জিকো,মেসি রোনাল্ডো,নেইমারদের বহু বছর আগেই ফুটবলকে দান করেছিলেন শৈল্পিকতা আর নৈপুণ্যতা। যিনি কিনা পায়ের জাদুতে হতবাক করেছেন হাজারো দর্শককে। মুলত তার একক নৈপুণ্যে সর্বভারতীয় ফুটবল টিম তৎকালীন গ্রেট ব্রিটেনের মত শক্তিশালী টিমকে ৪-১ গোলে আর ইউরোপীয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করে। হতবাক হয়ে যায় পুরো ইউরোপের ফুটবল বোদ্ধারা।

আফ্রিকায় এক সফরের সময় ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অধিনায়ক না করায় তিনি দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। তার অনুপস্থিতিতে দলটি সেবার সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি। তার প্রসঙ্গে ইংল্যান্ডের কৃতি ফুটবলার এলেক হোসি বলেছিলেন, “বিশ্বমানের যে কোনো ফুটবল দলে খেলার যোগ্যতা সামাদের রয়েছে।

ফুটবল জাদুকর সামাদ তার বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারে এমন অনেক বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। 

সেখান থেকে তিনি যোগ দেন কলকাতার এরিয়েন্স ক্লাবে। পরবর্তীতে তিনি ইষ্টবেঙ্গল রেলওয়ে ক্লাব, কোলকাতা মোহনবাগান, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়েও খেলেছেন। ক্যারিয়ারের শেষের দিকে তিনি কোলকাতা মোহমেডানের হয়ে কিছু দিন খেলেছেন। খুব কষ্ট লাগে আমাদের দেশের তরুনেরা পেলে চেনে, ম্যারাডোনা চেনে,হালের মেসি রোনাল্ডো,নেইমারকে চেনে, কিন্তু দেশের গর্ব সামাদ জাদুকরকে চেনে না।
ভাল মত জানে না।

ফুটবল জাদুকর সামাদের স্মরণে বাংলাদেশ সরকার একটি স্মারক ডাকটিকেট ও উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করে

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.