আমরা নিজেকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করি।
আমরা নিজেকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করি।
হাদিস শরিফে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা আল্লাহর গুণে
গুণান্বিত হও। আল্লাহর রং বা গুণ কী? তা হল আল্লাহতায়ালার গুণবাচক ৯৯ নাম। আল্লাহর
নামাবলী আত্মস্থ করার বা ধারণ করার অর্থ হল সেগুলোর ভাব ও গুণ অর্জন করা এবং সেসব
গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য কাজকর্মে, আচরণে প্রকাশ করা তথা নিজেকে সেসব গুণের অধিকারী
হিসেবে গড়ে তোলা।
আল্লাহ হলেন আল-গফ্ফার মানে মার্জনাকারী। আল্লাহ্
ক্ষমাশীল। আমাদের নবীজিও (সা.) ক্ষমরা মহৎ উদাহরণ ছিলেন। তাই আমারাও চেষ্টা করবো
মানুষদের ক্ষমা করতে।
আল্লাহ হলেন আল-মুই'জ্ব অর্থাৎ সম্মানপ্রদানকারী। আমরাও
চাইলে মানুষদের সম্মান করতে পারি। বড়দের সালাম আর ছোটদের স্নেহ করতে পারি।
প্রথম, আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং দুনিয়া ও
আখিরাত সম্পর্কিত তাদের সব হিদায়াত ও ওয়াদার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা।
দ্বিতীয়, এই বিশ্বাসের কার্যকারিতা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে
(অর্থাৎ কাজে) প্রকাশ করা।
তৃতীয়, শুধু ব্যক্তি জীবনের কল্যাণ ও সফলতা নিয়েই
সন্তুষ্ট না থাকা, বরং জাতির সামগ্রিক মঙ্গল ও উন্নতির প্রতি লক্ষ্য রাখা।
চতুর্থ, বিপদাপদ যতই আসুক না কেন, তা পূর্ণ ধৈর্য ও
স্থিরতার সঙ্গে সহ্য করা ও কল্যাণের পথ থেকে বিচ্যুত না হওয়া।
আমরা নিজেরা যেমন সৎকর্মশীল হব, তেমনি অন্যদেরও ভালো
কাজের নির্দেশনা দেবে। নিজের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সবাইকে পর্যায়ক্রমে
কল্যাণের পথের নির্দেশনা দেওয়া মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
َیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَ اَہۡلِیۡکُمۡ نَارًا وَّ قُوۡدُہَا النَّاسُ وَ الۡحِجَارَۃُ عَلَیۡہَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعۡصُوۡنَ اللّٰہَ مَاۤ اَمَرَہُمۡ وَ یَفۡعَلُوۡنَ مَا یُؤۡمَرُوۡنَ
‘হে মুমিনগণ, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেদের ও
তোমাদের পরিবারকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর।’ (সুরা :
তাহরিম, আয়াত : ৬)
আল্লাহ তাআলা সমাজের সবার সঙ্গে সার্বিকভাবে ন্যায়পন্থা
অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তম আচার-ব্যবহার ধারণ করা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত
থাকাই সব মুমিনের কর্তব্য।
পবিত্র কোরআনে এসেছে,
اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُ بِالۡعَدۡلِ وَ الۡاِحۡسَانِ وَ اِیۡتَآیِٔ ذِی الۡقُرۡبٰی وَ یَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ وَ الۡبَغۡیِ ۚ یَعِظُکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ
‘আল্লাহ তোমাদের ন্যায়পন্থা, মহানুভবতা ও নিকটাত্মীয়ের
অধিকার পূরণের আদেশ দেন এবং অশ্লীল কাজ, নিষিদ্ধ কার্যাবলি ও পাপাচার থেকে নিষেধ
করেন; তিনি তোমাদের উপদেশ দেন, যেন তোমরা তা গ্রহণ করো।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯০)
হাদিস শরিফে রয়েছে : তুমি জগৎবাসীর প্রতি দয়া কর, তবে
আল্লাহ তোমার প্রতি দয়া করবেন। (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)। আমরা দয়া বা রহমত লাভ
করেছি তা তখনই বুঝা যাবে যখন আমাদের আচার-আচরণে দয়া ও করুণা প্রকাশ পাবে। সমস্যায়
জর্জরিত আজকের পৃথিবীতে দয়া ও করুণার বড়ই অভাব। অশান্ত পৃথিবীর এই বিক্ষুব্ধ
পরিস্থিতিকে শান্ত করতে পারে পারস্পরিক দয়া অনুগ্রহ ও করুণা। আমরা যদি
দয়া ও অনুগ্রহের চর্চা করতে পারি, আমরা যদি আল্লাহ গুণে গুনান্বিত হতে
পারি তাহলে নিঃসন্দেহে সেই দিন খুব কাছেই যে দিন পৃথিবী পরিণত হবে
সুখময় জান্নাতের টুকরায়। সাধনায় সূচনা হোক নতুন দিনের। পৃথিবী ভরে উঠুক
আল্লাহর গুণে গুনান্বিত মানুষে।
কোন মন্তব্য নেই
please do not enter any spam link in the comment box.