Header Ads



বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদানের ৫২ বছর।

বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদানের ৫২ বছর।
জাতির জনক ও তোফায়েল আহমেদ


১৯৬৯ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর,আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভের ৫২ বছর পূর্তি আজ। ১৯৬৯ সালের এই দিনে সে সময়ের রেসকোর্স ময়দানে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর, আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। একটি শোষণহীন, বঞ্চনামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শেখ মুুজিবকে সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণনীয় অত্যাচার, জেল-জুলুম। তারপরও দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি।


সংগ্রাম-আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমানকে দমাতে বার বার কারাগারে পাঠায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।  তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা করা হয়। তেমনই এক মামলা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ আনে, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং গুটিকয় সাধারণ সৈনিক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।

 
মুজিব বনাম রাষ্ট্র(আগরতলা ষড়যন্ত্র)মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ৩৫ জন আসামির সবাইকে পাকিস্তানি সরকার গ্রেফতার করে। মিথ্যা মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানকে সাজা দেওয়ার পরিকল্পনা করে,পাকিস্তানিদের এই পরিকল্পনা
টের পেয়ে বাঙালি জাতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্র-জনতার মিছিলে রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে। গণআন্দোলনে নতিস্বীকার করে আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অভিযুক্ত সবাইকে মুক্তি প্রদানের ঘোষণা দেন।

জাতির জনক তাঁর যৌবনের ১৩টি মূল্যবান বছর পাকিস্তানের কারাগারে কাটিয়েছেন। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসে যে নেতা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলার ছবি হৃদয় দিয়ে এঁকেছেন, ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, সেই নেতাকে সেদিন জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনি শুধু বাঙালি জাতিরই মহান নেতা ছিলেন না, সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয়নি।
বঙ্গবন্ধু’ উপাধি প্রদানের ৫২ বছর।

 
২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং ওই সভায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। 

 
তোফায়েল আহমেদ লিখেছেন “তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে এই প্রথম ভাষণ দিলেন। সে কি ভাষণ! স্মৃতির পাতায় আজও ভেসে ওঠে। এ ভাষণের শেষেই তিনি বলেছিলেন, ‘আগরতলা মামলার আসামি হিসেবে আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার করে যখন ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাবে, তখন বুঝতে পেরেছিলাম যে ওরা আমাকে ফাঁসি দেবে। তখন এক টুকরো মাটি তুলে নিয়ে কপালে মুছে বলেছিলাম, হে মাটি আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমাকে যদি ওরা ফাঁসি দেয়, মৃত্যুর পরে আমি যেন তোমার কোলে চিরনিদ্রায় শায়িত থাকতে পারি।’ 

বক্তৃতার শেষে তিনি বলেছিলেন, ‘রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে তোমরা যারা আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছো, যদি কোনো দিন পারি নিজের রক্ত দিয়ে আমি সেই রক্তের ঋণ শোধ করে যাব।’ তিনি একাই রক্ত দেননি, সপরিবারে বাঙালি জাতির রক্তের ঋণ তিনি শোধ করে গেছেন।
বাংলার জনগণের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান নাম ছাপিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.