জনতার নেতা মহিউদ্দীন চৌধুরীর জন্য শোকগাঁথা – হাবিবুল হক বিপ্লব
মহিউদ্দীন চৌধুরীর ৩য় প্রয়ান দিবসে শ্রদ্ধা ও অফুরান ভালোবাসা।।
"তিনি খুব মিষ্টভাষী ছিলেন না । অকপট ছিলেন ততোধিক । তিনি খুব ভালো বলতেন না। কিন্তু স্পষ্টবাদী ছিলেন অনেক বেশী । তিনি পর্দার অন্তরালে আপোষের কানা গলিতে হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেন না । বরং খুব সামনা সামনি স্পষ্ট ও তীব্র ছিলেন প্রকাশে । নিজেই শুধু খেতে ভালবাসতেন তা নয় , খাওয়াতেও ভালবাসতেন দারুণ। তিনি শুধু মানুষের ছোঁয়া আর ভালবাসাই নেননি ,মানুষকে ভালবেসে মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছেন । তিনি কোন কবিতার সুষমাময় ,কাব্যের ব্যঞ্জনাময় রচনা লিখেননি । নিজের জীবনটাই করে তুলেছেন কবিতার চেয়েও ,কাব্যের চেয়েও অনেক বেশী উজ্জ্বল ।
তিনি কবি ছিলেননা , ছিলেন কবিয়াল । বইয়ের পাতায় ফুল পাখি প্রজাপতি চাঁদ জোছনা বিলাসে মজেননি। তিনি ছিলেন মেঠো পথ জুড়ে । খানা খন্দ ভরা রাজনীতির ঝড়ো মাঠে । কবির সুললিত বাণী তাঁর মুখে ভাষা হয়ে আসেনি । সহজ মানুষের কাছে জীবনের সহজপাঠ নিয়ে স্বভাব কবির ছন্দে হেঁটেছে তাঁর জীবন। তিনি উপন্যাস রচেননি। তিনি নিজেই হয়ে উঠেছেন উপন্যাস ।
তিনি আটপৌরে ছিলেন । তিনি গড়পড়তা ছিলেন । তাঁকে ধরা যেত । ছোঁয়া যেত । কুঠুরীর খোপে তাঁর জীবন কাটেনি । তিনি সাহসী ছিলেন । সুন্দরবনের মৌ আহরণকারী যেমন মৌমাছির তীব্র হুল ফোঁটার ঝুঁকি নিয়েও যায় মধু আহরণে । তিনি তেমনি বারবার সহজ রাস্তায় অনায়াস জীবনের স্বচ্ছ্বন্দ জীবন হেলায় ঠেলেছেন জনতার জন্য মধু আহরণে ।
তিনি বরাবর ছিলেন চট্টগ্রামের স্বার্থরক্ষায় নিরাপোষ। দেশের স্বার্থ আর চট্টগ্রামের স্বার্থ তাঁর কাছে বৈপরীত্য ছিলনা । তিনি দুয়ের সমন্বয় সাধন করেছেন অনায়াস দক্ষতায় ।
জীবন তাঁকে দিয়েছে অনেক । সবচাইতে বেশী দিয়েছে মানুষের ভালবাসা । জীবনে জীবন ঘষে ঘষে ভালবাসার আগুনে তিনি নিজেকেই পুড়িয়েছেন । নিয়মের কঠোর পথ বাঁধতে পারেনি তাকে । জীবনের অমোঘ নিয়ম , জীবনের কক্ষপথ থেকে তাঁকে ছিটকে দিয়েছে ঠিকই , তবে মানুষের ভালবাসা তাঁকে মহাকালে স্মরণ রাখবে আরো বহু বহু কাল ।
মহিউদ্দীন - চট্টগ্রাম অবিচ্ছেদ্য অবিরাম ।
জনতার নায়ক , জনতার মহিউদ্দীন ।
![]() |
লেখক:হাবিবুল হক বিপ্লব
কোন মন্তব্য নেই
please do not enter any spam link in the comment box.