Header Ads



যার আছে মহিউদ্দিনের মতো নেতা,তার পদ লাগেনা -হাসান মনসুর


যার আছে মহিউদ্দিনের মতো নেতা,তার পদ লাগেনা

তুই কন? আই ছোট মনসুর। আর স্যারের পোয়া নে? ঘরে ঢুকতেই দরজার মুখেই এটা কমন প্রশ্ন আর কথোপকথন। তারপর বলতো ঢাগে "বয়" ( পাশে বসো)। একদিন একজন অনেক বড় মানুষকে বললেন - বয়সের কারনে চোখে দেখতে সমস্যা হয়, আপনাকেও চিনেছি কথা বলতে বলতে - আন্দাজ করে । আমাকে দেখিয়ে বললেন - ইতে গুরা ফুয়া আসিল দে হেত্তেতুন আইসতু - ইতারার গলা হুনিলে বুঝি। ঐ লোক কি মনে করেছিল জানিনা, তবে আমার খুব অহংকার লেগেছিল উনার এই কথা শুনে। ১৯৮৯ সালে মেট্রিক পাশ করেই আমি আমার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলাম - মহিউদ্দিন ভাই তখন মহানগর আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি। আমাদের সম্মেলন হয়েছিল দামপাড়া পলটন রোডে - রাস্তার উপর মঞ্চ করে, গানের অনুষ্ঠান করেছিলাম। উনি প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন, আমাদের শপথ পড়িয়েছিলেন। politically officially সেদিন থেকেই তার সাথে যোগাযোগ - তারিখ ১৩ জুলাই ১৯৮৯। অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে আজ সেই বন্ধনের ইতি ঘটলো। প্রায় ২৮ বছর। আমার ৪৪ বছরের জীবনে একটা মানুষের সাথেই ২৮টা বছর একসাথে রাজনীতি করা - আবার হঠাৎ বিচ্ছেদ হওয়া অনেক বেদনার। হাজারো কথা, মান অভিমান, শাসন সব আজ বেশী মনে পড়ছে। আজ উনি চলে গেলেন- রাজনীতিতে সেরকম আগ্রহ আর নাই। নৌকার ভোটার, শেখ হাসিনার worker এটাই সেরা পরিচয়।
আজ হঠাৎ পুরনো কথা বলতে ইচ্ছে করছে - একবার ৪ মাস উনার সামনে যাইতে পারিনাই একটা একক সিদ্ধান্তের কারনে। তবে যেদিন যাই সেদিন উনি অবাক করে দিয়ে হেসে বলেছিলেন - বেশি ইমসনাল আর আবেগী মানুষ জীবনে কষট পায়। সেবার উনার সাথে কথা না বলেই নিজ থেকেই কোতোয়ালি থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক পদ থেকে সরে যাই। আমার কারনে সেদিন পত্রিকার ছাপার অক্ষরে প্রিয় নেতাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। দায়িত্বটা দিয়েছিলেনও তিনি - দলের অফিসে ভরপুর কার্যকরী কমিটির সভায়।

16_n

আমি খাতা নিয়ে মিটিং এর এজেনডা লিখছিলাম, আমাদের মাননীয় সেক্রেটারি ১ বছরের মতো আসতে পারছিলেননা তার স্ত্রীর অসুস্থতাজনিত কারনে। সেদিন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাউকে দায়িত্ব দিতেই এই জরুরী সভা ছিল - মহিউদ্দিন ভাই নিজেই পরিচালনা করছিলেন,আর আমি যথারীতি খাতা লিখছিলাম ৩নং সিদ্ধান্ত জানতে প্রশ্ন করলাম কার নাম লিখবো - উনি বললেন বেশী মাষ্টারী ন গরিস, তোর নাম লিখ, এই কথাতেই সবাই হাততালি দেয় , ৭ মাস ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালনের পরে অবশ্য হাততালি দেওয়া লেোকেরাই মুখ ফিরিয়ে নেয় , বিতর্ক তৈরি করে। মাননীয় সম্পাদক সাহেবও ফিরে আসেন। যখন দেখলাম সামান্য পদ নিয়ে এতো কথা তখন সাঃ সম্পাদক সহ পূর্বেকার সকল পদ থেকেই সরে যাই । ১০ টাকা দামের দলীয় সাধারন সদস্য পদই আমার কাছে সবসময় বড়। যার আছে মহিউদ্দিনের মতো নেতা, তার পদ লাগেনা - এটা আমি প্রমান করার চেষ্টা করেছি সবসময়।
মরহুম হয়ে গেলেন আজ আপনি - রাজনৈতিক ভাবে এতিম হলাম, অভিভাবক শুন্য হলাম। আবেগ আর ভালোবাসায় রাজনীতিকে উপভোগ করেছিলাম, আজ তার ছন্দপতন হল। আপনি নাই এই দুনিয়ায় তবে একটা কথা সত্য - লোভকে আপনি জয় করেছিলেন, মানুষের পক্ষে হকের পক্ষে আপনি কি রকম ঝুকি নিয়ে লড়াই করতেন তা গল্পের মতো - এটা আমি বলতে পারবো । আপনার মতো করে হয়তো কেউ আসবেনা- তবে কাছাকাছি আবার কেউ আসবে, এই বীর চট্টলার হয়ে কথা বলতে - এটাই আল্লাহর কাছে চাওয়া। পরপারে ভালো থাকুন নেতা। অনেক মিস করছি আপনাকে। আজকে আপনি নাই - হাসামিছা, গৎবাধা কথা বলে লাভ নাই - আপনার মতো করে কেউ পারবেনা আমাদের চট্টগ্রামকে ভালোবাসতে। আল্লাহ আপনার ভালোটাই করুন। আমিন।
হাসান মনসুর
সাঃ সম্পাদক(সাবেক)
কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগ-চট্টগ্রাম মহানগর।

কোন মন্তব্য নেই

please do not enter any spam link in the comment box.

merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.